
সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়া ফেসবুকে একটি ভিডিও শেয়ার করে দাবি করা হচ্ছে যে, কলকাতার কোয়েস্ট মলে প্রায় ২৫০ জন ব্যাক্তি অবৈধভাবে প্রবেশ করে ব্র্যান্ডেড কোম্পানির পোশাক সামগ্রী সহ ফুড কোর্ট থেকে খাদ্য সামগ্রী দাবি করেছে। পোস্টের ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে চকচকে মেছে যুক্ত একটি বদ্ধ ভবনে অনেক লোকের সমাগম। তাদের মধ্যে কয়েকজন মিলে মোবাইলে গেম খেলছে তো আবার অনেকে মেঝেতেই বসে রয়েছে, আবার একজন ব্যাক্তিকে মেঝেতে শুয়ে থাকতেও দেখা যাচ্ছে।
পোস্টের ক্যাপশনে লেখা হয়েছে, “কলকাতার কোয়েস্ট মলে একটি নির্দিষ্ট ধর্মের প্রায় ২৫০ জন স্থানীয় বস্তিবাসী মলে ঢুকে সেখানে থাকতে শুরু করে দেয়।ভিডিওতে দেখতে পাচ্ছেন কিছু লোক মোবাইল ফোন নিয়ে খেলছে, কেউ শুয়ে ঘুমতে লেগেছে।তাদের নিজেদের ঘরে গরম করছে বলে তারা মল দখল করে নেয়। সন্ধ্যায় অর্থাৎ সূর্যাস্তের পরে ফুড কোর্ট থেকে তারা বিনামূল্যে খাবার চায় এবং আরমানি, গুচি, পল স্মিথ ইত্যাদি আন্তর্জাতিক কোম্পানির দোকান থেকে তারা ঈদের জন্য বিনামূল্যে উপহার 🎁 চায়। মলের মালিক CESC-এর মালিক মিঃ সঞ্জীব গোয়েঙ্কা অসহায় বোধ করছিলেন হয়তো এই সব দেখে।“
তথ্য যাচাই করে আমরা দেখতে পেয়েছি পোস্টের দাবিটি বিভ্রান্তিকর। কলকাতার কোয়েস্ট মলে লোক জনের একটি ভারী ভিড় মলে অবৈধভাবে অনুপ্রবেশ করলেও তারা নামীদামী ব্র্যান্ডের জামা-কাপড়, জুতো বা ফুড কোর্ট থেকে খাদ্য সামগ্রী দাবি করেনি বলে জানিয়েছেন মলের উপসভাপতি সঞ্জীব মেহরা।
তথ্য যাচাই
এই দাবির সত্যতা যাচাই করতে আমরা প্রথমে গুগলে প্রাসঙ্গিক কিওয়ার্ড সার্চ করি। ফলে, মুখ্যধারার বিভিন্ন প্রতিবেদনে এই ঘটনার উল্লেখ পেয়ে যায়। ’টাইমস অফ ইন্ডিয়া’র প্রতিবেদন অনুযায়ী, কোয়েস্ট মল সংলগ্ন এলাকায় লোডশেডিং-এর জন্য কলকাতায় বিরাজমান তীব্র তাপমাত্রা থেকে রেহাই পাওয়ার জন্য এলাকার লোকজন ১৬ তারিখ অর্থাৎ রবিবার রাত প্রায় ১১;৩০টা নাগাদ মলে অবৈধভাবে অনুপ্রবেশ করেছিল। সেই সময় মলে বাইরে থেকে লোকজনের প্রবেশ নিষিদ্ধ হয়েগিয়েছিল কিন্তু যেহেতু রাত-এর শোতে বেশ কিছু লোকজন সিনেমা দেখছিল তাই মল খোলা ছিল। এই ঘটনাকে যারা ইচ্ছাকৃত ভুল উপস্থাপনের চেষ্টা করেছেন তাদের বিরুদ্ধে কলকাতা সাইবার সেলে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে মল কর্তৃপক্ষের তরফ থেকে। অনুপ্রবেশকারীদের বিনামুল্যে খাবার, উপহার চাওয়াকে ঘিরে মল উপ সভাপতি সঞ্জীব মেহরা বলেছেন- তাদের পক্ষ থেকে এরকম কোন দাবি করা হয়নি। অনুপ্রবেশকারীরা প্রায় ১;৩০ ঘণ্টা মলে কাটিয়েছিলেন এবং পুলিশের সহায়তায় তাদের মল থেকে বের করে দেওয়া হয়েছিল।

এই ঘটনাকে ঘিরে সোশ্যাল মিডিয়াই বিভ্রান্তিকর দাবি সহ ভিডিও, ছবি পোস্ট ভাইরাল হয়ে গেলে মলের তরফ থেকে একটি ফেসবুক পোস্টের মাধ্যমে জানানো হয় যে- ’হোয়াটসঅ্যাপ এবং সোশ্যাল মিডিয়ায় কোয়েস্ট মল সম্পর্কে একটি বিভ্রান্তিকর আখ্যান ভাসছে। আমরা আমাদের পৃষ্ঠপোষকদের এই অতিরঞ্জিত এবং উদ্দেশ্যমূলক বর্ণনা উপেক্ষা করার জন্য অনুরোধ করছি। আমরা ত্রুটিপূর্ণ চিত্রায়নের দ্বারা অস্পৃশ্য এবং সংবাদপত্রে আমাদের অবস্থান পরিষ্কার করেছি। আরও কোনো ব্যাখ্যার জন্য আপনি আমাদের সাথে যোগাযোগ করতে পারেন।“
সংবাদমাধ্যম ’আজতক’-এর ভিডিও উপস্থাপনটি দেখুনঃ
নিষ্কর্ষঃ তথ্য যাচাই করে ফ্যাক্ট ক্রিসেণ্ডো সিদ্ধান্তে এসেছে উপরোক্ত দাবিটি ভুয়া। কলকাতার কোয়েস্ট মলে লোক জনের একটি ভারী ভিড় মলে অবৈধভাবে অনুপ্রবেশ করলেও তারা নামীদামী ব্র্যান্ডের জামা-কাপড়, জুতো বা ফুড কোর্ট থেকে খাদ্য সামগ্রী দাবি করেনি বলে জানিয়েছেন মলের উপসভাপতি সঞ্জীব মেহরা।

Title:কোয়েস্ট মলে অবৈধ অনুপ্রবেশকারীরা মল থেকে দামি নামীদামী কাপড় বা খাদ্যসামগ্রী দাবি করেনিঃ সঞ্জীব মেহরা
Fact Check By: Nasim AkhtarResult: Misleading