
সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়ায় পাকিস্তান সংসদের একটি ভিডিও শেয়ার করে দাবি করা হচ্ছে , পাক সংসদেও মোদী মোদী স্লোগান চলছে। ভিডিওটিতে দেখা যাচ্ছে সংসদের একজন সদস্য বক্তব্য রাখছেন এবং স্পিকার বাকি সদস্যদের চুপ থাকতে বলছেন। ভিডিওটির ক্যাপশনে লেখা রয়েছে, “পাকিস্তান এর সংসদেও উঠল মোদি মোদি আওয়াজ😊…”।
তথ্য যাচাই করে আমরা দেখতে পেয়েছি এই দাবি ভুয়ো। পাকিস্তানের সংসদে “মোদী মোদী” নয় “ভোটিং ভোটিং” স্লোগান তোলা হচ্ছে।
তথ্য যাচাই
প্রথমে আমরা ভাইরাল হওয়া এই ভিডিওটিকে ভালোভাবে পর্যবেক্ষণ করি। দেখতে পাই এটি সংবাদমাধ্যম “ইন্ডিয়া টিভি”-এর একটি প্রতিবেদন যার ওপরের অংশে লেখা রয়েছে, “ফ্রান্সের আন্দোলন নিয়ে পাকিস্তানে সংসদে বিবাদ”।

এরপর কিওয়ার্ড সার্চ করে “পাবলিক নিউজ” নামে একটি সংবাদমাধ্যমের ইউটুইব চ্যানেলে ২৬ একটি ভিডিও দেখতে পাই যার ক্যাপশনে লেখা রয়েছে,
“ফ্রান্স থেকে পাকিস্তানের রাষ্ট্রদূতকে নিয়ে আসুন | জাতীয় পরিষদে সংযুক্ত প্রস্তাব | এফ এম কুরেশি”।
এই ভিডিওটি থেকে জানতে পারি ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে যে ব্যক্তিকে বক্তব্য দিতে দেখা যাচ্ছে তিনি হলেন পাকিস্তানের বিদেশমন্ত্রী শাহ মেহমুদ কুরেশি। এই ভিডিওটি আপলোড করে হয়েছে ২৬ অক্টোবর।

এই পুরো ভিডিওটি দেখে আমরা জানতে পারি, ফ্রান্সে ইসলাম ধর্মের নবী হযরত মুহাম্মদের ব্যঙ্গচিত্র নিয়ে আপত্তি জানিয়ে ফ্রান্স থেকে পাকিস্তানের রাষ্ট্রদূতকে ফিরিয়ে আনার দাবিতে সংসদে সংযুক্ত সংকল্পের প্রস্তাব দেওয়া হচ্ছিল। এরই মধ্যে বিরোধী পক্ষের সাংসদ খাজা আসিফ স্পিকারকে এই মর্মে মতদানের জন্য আবেদন জানান। এরপর স্পিকার তাদের বিদেশমন্ত্রী শাহ মেহমুদ কুরেশীকে তার মতামত রাখার অনুমতি দেন। তখনি সংসদের বাকি সদস্যরা ভোটিং ভোটিং স্লোগান তুলতে শুরু করে। এরপর স্পিকার বলেন, “ভোটিং হবে, সব কিছু হবে, সব কিছু হবে, শান্ত হয়ে বসুন আপনারা”।
স্পিকারের এই মন্তব্যের পরেই স্পষ্ট হয়ে যায় সাংসদরা ভোটিং ভোটিং বলছিলেন। এই ভোটিং ভোটিং স্লোগানকেই ভারতের বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম এবং নেটিজেনরা “মোদী মোদী স্লোগান” দাবি করে।
এই ভোটিং ভোটিং স্লোগান নিচে দেওয়া ভিডিওর ১২.১৫ মিনিট থেকে ১৫.১২ মিনিট অবধি শুনতে পাবেন।
এই ভিডিওতে আরও দেখতে পাই সাংসদরা স্লোগান তুলে বলছেন, “মোদীর বন্ধু যারা, বিশ্বাসঘাতক তারা”। ভিডিওর ১৭.৫০ মিনিট থেকে ১৮.৫৬ মিনিট অবধি এই স্লোগান শুনতে পাবেন।
স্পষ্ট হয়ে যায় যে আসল ভিডিওতে মোদী মোদী স্লোগান শোনা যাচ্ছে না। মূল ভিডিও থেকে ছোট একটু অংশ কেটে ভুয়ো দাবির সাথে সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করা হচ্ছে। ভিডিওর যে অংশে শোনা যাচ্ছে “মোদীর বন্ধু যারা, বিশ্বাসঘাতক তারা” সেটিকে বাদ দিয়ে দেওয়া হয়েছে।
নিষ্কর্ষঃ তথ্য যাচাই করে ফ্যাক্ট ক্রিসেন্ডো সিদ্ধান্তে এসেছে উপরোক্ত দাবিটি ভুল। পাকিস্তানের সংসদে “মোদী মোদী” নয় “ভোটিং ভোটিং” স্লোগান তোলা হচ্ছে