পুনে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভের ভিডিওকে মোদীর বাসভবনে হামলার দাবি করে শেয়ার 

False Social

সম্প্রতি সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকে একটি ভিডিও যেখানে দেখা যাচ্ছে বড় গেট বিশিষ্ট এক ভবনের সামনে রয়েছে পুলিশের উপস্থিতি এবং ব্যারিকেড দিয়ে আটকে রাখা হয়েছে বিক্ষভকারীদের। তার মাঝেই এক বিক্ষোভকারী ব্যারিকেড উলঙ্ঘন করে গেটে চড়াও হয় এবং তার পরে পরেই বিক্ষোভকারীরা ব্যারিকেড ভেঙ্গে ফেলে গেটের দিকে ধাওয়া করে। ভিডিওটি শেয়ার করে দাবি করা হচ্ছে যে, এটি প্রধানমন্ত্রী মোদীর বাসভবনে হামলার ভিডিও। 

ভিডিওটি শেয়ার করে ক্যাপশনে লেখা হয়েছে,”নরেন্দ্র মোদির বাড়িতে ছাত্র জনতার হামলা শ্রীলঙ্কা -বাংলাদেশ -লিবিয়া -নেপালের পর এবার বোধহয় মোদির পালা। শালা বাংলাদেশ নিয়ে মাথা ঘামানো বাদ দিয়ে এবার নিজের গদি বাচা।“ 

তথ্য যাচাইয়ের মাধ্যমে আমরা পেয়েছি দাবিটি সম্পূর্ণ ভুয়ো ও বিভ্রান্তিকর। পুনে বিশ্ববিদ্যালয়ের তৃতীয় বর্ষের ইঞ্জিনিয়ারিং ছাত্র-ছাত্রীদের পরীক্ষার ফলাফলে ত্রুটির অভিযোগে ছাত্র সংগঠনগুলোর বিক্ষোভের ভিডিওকে বিভ্রান্তিকর দাবি সহ শেয়ার করা হচ্ছে। 

ফেসবুক পোস্ট 

তথ্য যাচাইঃ 

প্রথমত, যদি প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবনে হামলা হত তবে তা সংবাদমাধ্যমে ব্যাপকভাবে আলোচিত হত। তাছাড়া, এ ধরনের ঘটনা ঘটলে তা সামাজিক মাধ্যমেও ছড়িয়ে পড়ত বন্যার মতো। কিন্তু সংবাদ প্রতিবেদনে এই খবরের অনুপস্থিতি থেকেই ধারণা করা যায় যে দাবিটি ভুয়ো। 

তাহলে ভিডিওটি কোথাকার? 

এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে ভিডিওর কি ফ্রেমগুলোকে গুগলে রিভার্স ইমেজ সার্চ করি। ফলস্বরুপ, জানতে পারি, ভিডিওটি পুনের সাবিত্রিবাই ফুলে বিশ্ববিদ্যালয়ের। ভিডিওটি ১৪ জুন, ২০২০৫, তারিখে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের দ্বারা বিক্ষোভ প্রদর্শনের।  

কি ঘটেছিল বিশ্ববিদ্যালয়ে? 

ছাত্রদের মতে, ফলাফলে ভুল রয়েছে। বিশেষ করে গ্রেস মার্কস’ বিষয়ে অনিয়ম হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়ম অনুসারে মোট নম্বরের ১০% পর্যন্ত গ্রেস দেওয়া যায়, উদাহরণস্বরূপ, যদি কোনো পরীক্ষা ৫০ নম্বরের হয়, তাহলে সর্বোচ্চ ৫ নম্বর গ্রেস দেওয়া উচিত। কিন্তু অভিযোগ অনুযায়ী, কিছু ছাত্রীকে দেওয়া হয়েছে গ্রেস হিসেবে ২০ নম্বর, যা নিয়মের পরিপন্থী। তাদের দাবি ছিল- পরীক্ষার ফলাফলের পুনর্মূল্যায়ন করা হোক,  Carry‑on সিস্টেম পুনরায় চালু করা হোক (যেখানে কেউ কোনো বিষয়ে ফেল করলে তবুও পরবর্তী বর্ষে যেতে পারবে, নতুন পরীক্ষা প্যাটার্ন বাতিল করার দাবি দাওয়া নিয়ে এই আন্দোলন হয়েছিল। বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন কলেজের ইঞ্জিনিয়ারিং ডিপার্টমেন্ট ও তৃতীয় বর্ষের অনার্স (আন্ডারগ্র্যাজুয়েট) ছাত্র-ছাত্রীরা অংশ নিয়েছিল এই আন্দোলনে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ দুই দিনের সময় নিয়েছিল সমস্যার সমাধানের জন্য। 

প্রতিবেদন আর্কাইভ 

অন্যান্য প্রতিবেদন গুলো পড়ুন এখানে, এখানে, এখানে। 

নিষ্কর্ষঃ তথ্য যাচাইয়ের মাধ্যমে ফ্যাক্ট ক্রিসেন্ডো এই সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছে যে, পুনে বিশ্ববিদ্যালয়ের তৃতীয় বর্ষের ইঞ্জিনিয়ারিং ছাত্রছাত্রীদের পরীক্ষার ফলাফলে ত্রুটির অভিযোগে ছাত্র সংগঠনগুলোর বিক্ষোভের ভিডিওকে নরেন্দ্র মোদীর সরকারি বাসভবনে ছাত্র জনতার হামলার ভিডিও দাবি করে শেয়ার করা হচ্ছে। 

Avatar

Title:পুনে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভের ভিডিওকে মোদীর বাসভবনে হামলার দাবি করে শেয়ার

Fact Check By: Nasim Akhtar 

Result: False

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *