বার্মিংহামে মন্দিরে হামলাকারী মহম্মদ রিজওয়ানকে আক্রমন করছে হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজন ? জানুন ভাইরাল ভিডিওর সত্যতা 

সম্প্রতি সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকে একটি ভিডিও শেয়ার করে দাবি করা হচ্ছে, ইংল্যান্ডের বার্মিংহামে মন্দিরে হামলাকারী মহম্মদ রিজওয়ানকে পুলিশ কর্তৃক আদালতে নিয়ে যাওয়ার পথে হিন্দু ধর্মাবল্বিরা তার ওপর আক্রমন করেছে। ২ মিনিট ১৮ সেকেন্ডের এই ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে পুলিশ এক ব্যাক্তিকে গ্রেফতার করে নিয়ে যাচ্ছে এবং সেই সময় সেখানে উপস্থিত জনগনের একটি ভিড় পুলিশের উপস্থিতিতেই তার ওপর আক্রমন শুরু করলো। অবশেষে পুলিশ বাহিনীর প্রচেষ্টায় তাকে সেখান থেকে বের করে নিয়ে যাওয়া হয়। 

পোস্টের ক্যাপশনে লেখা হয়েছে, “ইংল্যান্ডের বার্মিংহামে মন্দিরে হামলাকারী মহম্মদ রিজওয়ানকে থানা থেকে আদালতে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল, সেখানে বসবাসকারী হিন্দুরা জানতে পারে, তারপর কী হয়েছিল —- আপনি নিজেই দেখুন।“ 

তথ্য যাচাই করে আমরা দেখতে পেয়েছি এই দাবি ভুয়ো এবং বিভ্রান্তিকর। লন্ডনে প্রদর্শিত হিজাব বিরোধী আন্দোলনের ভিডিওকে বিভ্রান্তিকর দাবির সাথে জুড়ে ভুয়ো পোস্ট ভাইরাল করা হচ্ছে। 

ফেসবুক পোস্ট 

উল্লেখ্য, গত মাসের ১৬ তারিখ ইরানে মাহসা আমিনি নামের এক মুসলিম মহিলা ঠিকমত ভাবে হিজাব না করায় তাকে গ্রেফতার করেছিল ইরানীয় পুলিশ। কিছু সময়ের মধ্যেই তার মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়ে ইরান সহ সারা বিশ্বে। পুলিশ হেফাজতে থাকা সত্ত্বেও তেহরানের এক হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়। এই ঘটনার পর ইরান সহ সারা বিশ্বে হিজাব বিরোধী আন্দোলন শুরু হয়েছে। বিস্তারিত পড়ুন 

তথ্য যাচাই

এই দাবির সত্যতা যাচায় করতে প্রথমে আমরা গুগলে প্রাসঙ্গিক কি ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে খুঁজে দেখার চেষ্টা করি যে, বার্মিংহামে মন্দিরে হামলার জন্য মহম্মদ রিজওয়ান নামের কাউকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে কি না। ফলে, আমরা কোন সংবাদপত্রিকায় এরকম কোন খবরের উল্লেখ পাইনা। এখান থেকে ধারণা হয়ে যায় ভিডিওটি বিভ্রান্তিকর। 

ভিডিওটির আসল উৎস ? 

এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে ভিডিওটিকে ইনভিড টুলের মাধ্যমে কি ফ্রেমে ভাগ করে গুগল রিভার্স ইমেজ সার্চ করি। ফলে, আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম ডেইলি মেইল-এর ইউটিউব চ্যানেলে ভাইরাল এই ভিডিওর অনুসন্ধান পাওয়া যায়। ২৬ সেপ্টেম্বর তারিখে আপলোড করা এই উপস্থাপন অনুযায়ী, ভিডিওটি লন্ডনের। লন্ডনে অবস্থিত ইরানের দূতাবাসের সামনে হিজাবের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ প্রদর্শন করা হয়েছিল। এই প্রদর্শন চলাকালীন ধর্মীয় মিছিলের এক সদস্যের সাথে কিছু প্রদর্শনকারীর বচসা বেঁধে উঠেছিল। ভাইরাল এই ভিডিওটি তখনকার। ৮:৫৩ মিনিটের এই দীর্ঘ ভিডিওর ৩:১৭ মিনিটের পর থেকে ভাইরাল ভিডিওর দৃশ্য দেখতে পাওয়া যাবে। 

নিষ্কর্ষঃ তথ্য যাচাই করে ফ্যাক্ট ক্রিস্যান্ডো সিদ্ধান্তে এসেছে উপরোক্ত দাবিটি ভুয়ো ও ভিত্তিহীন। লন্ডনে প্রদর্শিত হিজাব বিরোধী আন্দোলনের ভিডিওকে বিভ্রান্তিকর দাবির সাথে জুড়ে ভুয়ো পোস্ট ভাইরাল করা হচ্ছে।